হাঁস পালনের পরিকল্পনা 🐣🐣
আমাদের দেশের আবহাওয়া হাঁস পালনে খুবই উপযোগী। সমস্যা হচ্ছে হাঁসের মাংস ও ডিম মুরগির মাংসের চেয়ে জনপ্রিয় কম।
তবে বর্তমানে এটি অনেক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এখন হাঁস চাষ লাভজনক একটি প্রযুক্তি।
অনেকেই বাণিজ্যিকভাবে হাঁস চাষে এগিয়ে আসছেন এবং প্রধান পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন হাঁস চাষ।
মৎস্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাদের মতে, পুকুরে হাঁস ও মাছের সমন্বিত চাষ পদ্ধতি অবলম্বন করলে খুব সহজে বেশি লাভবান হওয়া সম্ভব।
হাঁস চাষে অনেক সুবিধা রয়েছে যেমন- মাছের জন্য পুকুরে তেমন বাড়তি সার ও খাদ্য দিতে হয় না । হাঁস থাকলে মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
হাঁস পালনে সুবিধা :
হাঁসের রোগবালাই তুলনামুলক খুবই কম। তাছাড়া খাবারের তেমন অভাব হয় না।
দেশি মুরগি যেখানে গড়ে বছরে ৫৫টি ডিম দেয়, দেশি হাঁস সেখানে ৯০টির বেশি ডিম দিয়ে থাকে।
আর উন্নত জাত হলে বছরে ২৫০-৩০০টি ডিম দিয়ে থাকে।
যেভাবে শুরু করতে পারেন :
এ প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে চাইলে আপনার 45-50 শতাংশ আয়তনের একটি পুকুর লাগবে।
150-200টি হাঁস এবং হাঁসের ঘর তৈরি করে নিতে হবে।
এসব পরিকল্পিতভাবে করলে ভালো হবে।
পাহারাদারের ঘরটি হাঁসের ঘরের দক্ষিণ পাশে হলে ভালো হয়।
উন্নত হাঁসের জাত :
হাঁসের জাত নির্বাচন করার ক্ষেত্রে যে জাতের হাঁস বেশি ডিম দেয় সে জাতের হাঁস নির্বাচন করতে হবে।
এক্ষেত্রে খাকি ক্যাম্পেবেল, ইন্ডিয়ান রানার, সিলেট মিটি ও নাগেশ্বরী জাত নির্বাচন করা যেতে পারে।
এ জাতের হাঁস ৫ মাস বয়স থেকে ২ বছর পর্যন্ত ডিম দেয়।
যেভাবে হাঁস পালন করবেন :
হাঁস বিভিন্ন পদ্ধতিতে পালন করা যায়। এর মধ্যে একটি হচ্ছে মুক্ত জলাশয়ে হাঁস পালন।
এ পদ্ধতিতে 100-150টি হাঁস মুক্ত পুকুরে, লেকে অথবা ধান কাটার পর পরিত্যক্ত জমিতে পালন করা যায়।
অপরটি হচ্ছে ইনটেনসিভ হাঁস পালন। 100-10000 পালন করা সম্ভব।
দিনের বেলায় হাঁস পানিতে থাকতে পছন্দ করে। শুধু রাতযাপনের জন্য ঘরের প্রয়োজন।
হাঁসের ঘর তৈরি :
পুকুরপাড়ে কিংবা পুকুরের ওপর ঘরটি তৈরি করতে হবে। ঘরের উচ্চতা 6-7 ফুট হলে ভালো হয়।
ঘর তৈরিতে বাঁশ, বেত, টিন, ছন, খড় ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে।
তবে ইট দিয়ে মজবুত করে ঘর তৈরি করতে পারলে ভালো হবে।
ঘরটি খোলামেলা হতে হবে এবং সাপ ও ইঁদুর থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
শহরে বিভিন্ন মাপের চৌবাচ্চায় হাঁস পালন করা হচ্ছে ।
এক্ষেত্রে প্রশস্ত ছাদ থাকলে সুবিধা বেশি। ছাদের একপাশে ঘর অপর পাশে চৌবাচ্চা নির্মাণ করতে হবে।
প্রজননের জন্য আটটি হাঁসের সঙ্গে একটি পুরুষ হাঁস রাখা দরকার।
এরপর দেশি মুরগির সাহায্যে অথবা ইনকিউবেটরে হাঁসের ডিম ফোটানো যায়।
কোথায় পাবেন হাঁসের বাচ্চা :
পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত হাঁস-মুরগির খামার ও
বিশ্বস্ত ব্যক্তিদের কাছ থেকে হাঁস বা হাঁসের বাচ্চা সংগ্রহ করতে পারেন।
হাঁসের খাদ্য :
হাঁস চাষে সুবিধা হলো হাঁস খাল-বিল-পুকুর থেকে তার কিছু খাবার সংগ্রহ করে নেয়।
তাছাড়া বাজারে হাঁসের তৈরি খাবার কিনতে পাওয়া যায়।
শুকনো খাদ্য না দিয়ে হাঁসকে সবসময় ভেজা খাদ্য দেয়া উচিত।
খাদ্যে আমিষের পরিমাণ ডিম দেয়া হাঁসের ক্ষেত্রে 18-19 শতাংশ ও বাচ্চা হাঁসের ক্ষেত্রে 22 শতাংশ রাখা উচিত।
হাঁস দানা, খইল, ভূষি, ঝিনুকের গুঁড়ো, ডিমের খোসা, কেঁচোসহ অন্যান্য খাবার বেশি পছন্দ করে।
মাছের পুকুরেও হাঁস পালন
পরিসংখ্যানে দেখা যায়, মাছের পুকুরে হাঁস পালন করলে কৃষকরা বেশি লাভবান হন।
এ চাষে হাঁস বেশি প্রোটিন পায়। মাছ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।
সম্ভাব্ লাভ
30-40 শতাংশের একটি পুকুরে 150-200টি হাঁসের জন্য এ প্রকল্প শুরু করলে সব মিলে খরচ হবে 55-60 হাজার টাকা।
সঠিক পরিচর্যা আর যত্ন নিতে পারলে প্রথম বছরে যাবতীয় খরচ বাদ দিয়ে 30-50 হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
রোগমুক্ত, উন্নত জাতের হাঁস আধুনিক পদ্ধতি ও সঠিক নিয়ম অনুযায়ী চাষ করুন।
যে কোনো পরামর্শের জন্য আপনার উপজেলা বা জেলা মৎস্য ও পশুসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।
সঠিক পরিচর্যা আর যত্ন নিতে পারলে প্রথম বছরে যাবতীয় খরচ বাদ দিয়ে 30-50 হাজার টাকা আয় করা সম্ভব।
রোগমুক্ত, উন্নত জাতের হাঁস আধুনিক পদ্ধতি ও সঠিক নিয়ম অনুযায়ী চাষ করুন।
যে কোনো পরামর্শের জন্য আপনার উপজেলা বা জেলা মৎস্য ও পশুসম্পদ অফিসে যোগাযোগ করতে পারেন।
খুব সুন্দর আটিকেল ভালো লাগলো।
উত্তরমুছুন